Type Here to Get Search Results !

আমার পরী বউ

#আমার_পরী_বউ

#পর্ব_১


.......

--ঘুমে প্রায় বিভোর হয়ে গিয়েছি।এমন সময় লক্ষ্য করলাম,কেউ একজন আমার ঠোঁট জোড়াতে চুমু খাচ্ছে।শরীর অনেক ক্লান্ত!তাই চোখ মেলে তাকাবার মতন শক্তি জোগাতে পারছিনা,যে কে আমার ঠোঁট জোড়ায় চুমু খাচ্ছে।তার মধ্যে মাতাল করা একটা স্মেল নাকে ভেসে আসছে।


একটু পর ফজরের আজান হলো।আজানের সুর শুনে লাফিয়ে বিছানা থেকে উঠে গেলাম।

আসেপাশে তাকিয়ে কাউকে দেখতে পেলাম না।বেশ অবাক হলাম কাউকে দেখতে না পেয়ে!কারন একটু আগে কিছু একটা অনুভব করেছিলাম আমি।কেউ একজন আমায় ঠোঁট জোড়ায় চুমু খাচ্ছিলো।মাথায় যেনো কিছুই ঢুকছে না!ধুর আমার কোথাও ভুল হচ্ছে হয়তো।আমি মনে হয় ঘুমের ঘোরে উল্টো-পাল্টা স্বপ্ন দেখেছি।


বিছানা ছেড়ে উঠে গিয়ে অজু করে নিলাম।কারন ফজরের নামাজ পড়তে হবে।নামাজ শেষ করে খাটের উপরে বসে আছি।তখনি অনুভব করালম, ঠোঁট জোড়া মধুর মতন মিষ্টি হয়ে আছে!মনে হয় যেনো কয়েকশো কেজি মধু আমি শ্রবণ করেছি।এমন সময় সৎমা চেঁচিয়ে উঠলো....


--এই যে নবাবের ছেলে,বিছানা ছেড়ে উঠে পড়ুন।আর রেডি হয়ে কাজে চলে যান।আজকে রাতে যেনো পাঁচ হাজার টাকা হাতে পাই।


--আম্মু,এত টাকা কই পাবো আমি?

আমার সারাদিনের কামাই মিলে তো হাজার খানেক টাকা হয় না।সেখানে পাঁচ হাজার টাকা কি ভাবে কি!


--সে আমি জানি না।বাসায় বাজার শেষ হয়ে এসেছে।বাজার করতে হবে।টাকা তুমি কি ভাবে জোগাড় করবে,সে তুমি জানো।এতকিছু ভেবে আমার লাভ নাই।আমার চাই শুধু টাকা।যাও এবার ফটাফট গিয়ে কাজে লেগে যাও।


--চুপচাপ বসে আছি।আজ মা বেঁচে নেই বলে এমন অত্যাচার সহ্য করতে হচ্ছে আমাকে।এখনো রাত শেষ হয়নি,আর উনি এসে পাহাড় সমান বোঝা চাপিয়ে দিলো।

আচ্ছা,আমায় কিছু খেতে দাও মা।খেয়ে কাজে চলে যাচ্ছি।


--খাবার মতন কোনো কিছু নাই ঘরে।আর থাকলেও সেটা আমার আর আমার মেয়ের জন্য।না খেয়েই কাজে চলে যাও।রাতে এসে পাঁচ হাজার টাকা বুঝিয়ে দেবে।তারপরেই তোমার কপালে খাবার জুটবে।


--সৎমার কথা শুনে চোখ জোড়া ঘোলাটে হয়ে আসছে!

আসলেই মা আর সৎমার মধ্যে আকাশ পাতাল ব্যবধান।সারাটাদিন কুলির মতন খাটাখাটুনি করবো,কিন্তু তাও দিন শেষে সুখ জিনিসটা কপালে জুটবে না।না খেয়েই রাতের শেষ ভাগে বেরিয়ে পরলাম কাজের জন্য।

স্টেশনের দিকে হাঁটা দিয়েছি।যেতে যেতে আসুন,পরিচিত হয়ে নেই।


(আমার নাম তো সকলেই জানেন।নতুন করে বলার কিছুই নেই।পড়া লেখা ইন্টার পর্যন্ত করার সুযোগ হয়েছে।পরে সৎমায়ের কারনে বাবা আমার পড়ালেখা অফ করে দেয়।পরিবার বলতে তেমন কেউ নেই।সৎ মা,আর বাবা।আর আমার সৎ একটা বোন আছে।নাম সামিয়া।বাকি সমস্ত কিছু গল্পের সাথে থাকলেই জেনে যাবেন।)


স্টেশনে গিয়ে দেখি কেউ নাই।চুপচাপ করে বসে আছি।

কি করবো,কি ভাবে রাতের মধ্যে পাঁচ হাজার টাকা জোগাড় করবো ভেবে পাচ্ছি না!সকাল সাতটা থেকে আবার কাজে যেতে হবে।ভেবেছি স্টেশনে এসে হয়তো কুলিগিড়ি করে আলাদা করে কিছু পয়সা কামাবো।কিন্তু তা আর হলো না।এমন সময় অল্প বয়সী একটা মেয়ে আমার দিকেই এগিয়ে আসে।


--এই যে,শুনছেন?


--হা বলুন।বলে মেয়েটার দিকে তাকাতেই আমাট চোখ জোড়া কপালে উঠে গেলো!হা করে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছি!একটা মেয়ে এতটা সুন্দর কি করে হতে পারে,তা নিজের চোখে না দেখলে কখনোই বিশ্বাস করতে পারতাম না।মনে হচ্ছে জান্নাত থেকে পালিয়ে এসেছে।


--এই যে,এমন করে কি দেখছেন?


--মেয়েটার কথায় হুঁশ ফিরে আসে।নাহ কিছু না।


--আমার একটা উপকার করতে পারবেন?

তার বিনিময়ে আপনার যত টাকা লাগে,আমি দিবো।


--জ্বি কি কাজ বলুন?


--আমাকে আপনার শহরটা ঘুরিয়ে দেখাবেন।আই মিন,সারা শহর ঘুরবো।আর আপনি আমার সাথে থাকবেন।


--খুশিতে ভিতরটা ফেটে যাচ্ছে।যাক বেশি না,পাঁচ হাজার টাকা দাবী করবো।

আচ্ছা,কিন্তু পাঁচ হাজার টাকা দিতে হবে আমাকে।


--ওকেহ দিবো।


--সেদিন আর কাজে গেলাম না।মেয়েটাকে নিয়ে সারা শহর ঘুরবো।

দিনের আলো ফুটেছে হালকা হালকা।একটা সিএনজি ঠিক করলাম।

শুরুতে উনাকে আমাদের শহরের সব চাইতে বড় পার্কটাতে ঘুরাবো।

সিএনজিতে বসে আছি।ঠিক তখনি রাতের সেই মাতাল করা স্মেলটা নাকে আসলো!বেশ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি উনার দিকে!

কিন্তু কিছু বললাম না।


সিএনজি ওয়ালা মামা পার্কের সামনে গিয়ে থামলো।

উনি ভাড়াটা চুকিয়ে দিলো।তারপর উনাকে নিয়ে পার্কের ভিতরে ঢুকলাম।

সবাই আমাদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।কারন আমার জামা কাপড়ের ঠিক ঠিকানা নেই।তার উপরে উনি দামী জামাকাপড় পড়ে আছে।

মানুষের মনে হাজারটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে!মানুষ হয়তো ভাবছে,যে মেয়েটা আমার কিছু হয়।


সারাদিন ঘুরাঘুরি করলাম উনাকে নিয়ে।

বিকেল বেলায় একটা রেস্টুরেন্টে গেলাম।খাবার খেয়ে যেই না বের হবো,তখনি কয়েকজন ছেলে আমাদের পথ আটকায়।আর উনার সাথে অসভ্যতামো শুরু করে।

এটা দেখেই তো মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।ছেলে একটার গালে কোষে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলাম।বাকি অন্য একটা ছেলে এসে আমার হাতের মধ্যে ছুরি চালিয়ে দিলো।সাথে সাথে হাত থেকে ফুলকি দিয়ে রক্ত বের হওয়া শুরু হয়েছে।আর কয়েকজন এসে আমাকে পিছন থেকে ঝাপটে ধরে ফেললো।নড়াচড়া করার মতন কোনো স্কোপ নাই।


আর যাকে থাপ্পড় মেরেছি,সেই ছেলেটা উনার গায়ের মধ্যে হাত দিয়ে বসে!

ভিতরটা রাগে ফেটে যাচ্ছে।একটা মেয়ের ইজ্জত নষ্ট হচ্ছে আমার চোখের সামনে।কিন্তু আমি কিছুই করতে পারছি না।হটাৎ এই ছেলেটা বিকট আওয়াজ করে চেঁচিয়ে উঠে।আর মাটিতে পড়ে যায়।যারা আমাকে পাকড়ে ধরেছিলো,তারা আমাকে ছেড়ে দিয়ে উনার দিকে এগিয়ে যায়।ছেলেগুলো ও সেম ভাবে চিৎকার করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।

কি হচ্ছে মাথায় তো কিছুই কাজ করছে না।উনি কি এমন করলো,যে ছেলেগুলো মাটিতে লুটে পড়লো।উনি আমার দিকে এগিয়ে আসে।

হাত থেকে তখনো অঝোরে রক্ত পড়ছে।


--এই দেখি আপনার হাতে কতটুকু লেগেছে।


--না ম্যাডাম কিছু হয়নি।আমি ঠিক আছি।


--এই ছেলে,একদম বেশি কথা বলবেন না।হাতটা দেখাতে বলেছি।


--হাতটা উনার দিকে এগিয়ে দিলাম।


--আল্লাহ হাতটা তো অনেক খানি কেটে গেছে।

দেখি চলেন আমার সাথে।


--উনি আমাকে নিয়ে গিয়ে একটা জায়গায় বসায়।


--দেখি চোখ বন্ধ করেন।


-- কেনো কেনো।চোখ কেনো বন্ধ করবো?


--আরেহ যেটা বলেছি সেটা করেন।


--চোখটা বন্ধ করতেই,উনি আমার হাতটা ধরে ক্ষত জায়গাটার মধ্যে একটা চুমু বসিয়ে দিলো।হাজার বোল্টের একটা শকড খেলাম!

আল্লাহ!কি করলো উনি এটা!


-- হা এবার চোখ খুলেন!


--চোখ খুলে দেখি হাতের রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে গেছে।আর এখন ব্যথাও লাগছে না।

কি করলেন আপনি এটা?


--যা করার করেছি।সেটা আপনার না জানলেও চলবে।

এখন চলেন....


--আচ্ছা চলেন।তারপর উনাকে নিয়ে আবার গাড়িতে উঠে গেলাম।


--শোনেন? বাসায় গিয়ে রেস্ট করবেন।আর এই যে খামটা নিন।বাসায় গিয়ে খুলবেন সেটা।


--উনি আমাকে বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে গেলো।

অবাক চোখে তাকিয়ে আছি উনার চলে যাওয়ার দিকে।মানুষটা খুব ভালো।কিন্তু কে উনি,কি তার পরিচয়।কোথায় থাকেন,নাম কি,কিছুই জানা হলো না।সারাদিন কোনো এক মোহের মধ্যে দিয়ে দিন পাড় হয়ে গেলো।


মাগরিব হয়ে এসেছে প্রায়।

বাসায় ঢুকতেই সৎমার চেঁচামেচি শুরু।


--তুই,এত আগে বাড়ি কেনো এসেছিস?


--শরীর ভালো না,তাই চলে এসেছি।


--আমার টাকা এনেছিস?


--নাহ,টাকা জোগাড় হয়নি।


--নবাবজাদা আজ শুধু খেতে আসিস তুই।

তোর খাওয়া দাওয়া সব বন্ধ।


--রুমে এসে বসে আছি।উনার দেওয়া খামটা পকেট থেকে বের করে খুললাম।খামটা যেই না খুললাম,চোখ জোড়া কপালে উঠে গেলো!

হাজার টাকার নোট সব কয়টা।কম হলেও পঞ্চাশ হাজার তো হবেই।

সেখান থেকে দশ হাজার টাকা নিয়ে সৎমার কাছে চলে গেলাম।

গিয়ে সোজা উনার মুখের উপরে টাকা গুলো ছুঁড়ে মারলাম।ধরেন আপনার টাকা।পাঁচ হাজার বলেছেন।দশ হাজার দিছি।আর একটা কথা মাথায় রাখবেন।আপনি কোনোদিন কারোর মা হওয়ার যোগ্যতা রাখেন না।

যে মা টাকার জন্য সন্তানকে খাবার দেয়না।সে মা নামের কলঙ্ক।

বলেই রুম থেকে বের হয়ে আসলাম।


ছাদে দাঁড়িয়ে আছি।এমন সময় আব্বু এসে শাসিয়ে গেলো।

যে ওর মার সাথে বেয়াদবি কেনো করেছি।নেক্সট টাইম করলে আমাকে ঘর ছাড়া করবে।


হাহ,কপাল!

বাবাও দুঃখ গুলো বুঝে না!

সবাই খালি নিজের মতন করে চাপিয়ে দিয়ে চলে যায়।

রাতে আর খাবার খেলাম না।বাবার কথা শোনার পর আর খাওয়ার ইচ্ছে নেই।


রাত দুইটা বাজে।চোখ বুঝে শুয়ে আছি।ঘুম আসছে না।

এমন সময় কিছু একটা অনুভব করলাম।চোখটা হালকা করে মেলে দেখি,একটা ছায়ামূর্তি আমার পাশে বসে আছে!

এটা দেখেই তো বুকের মধ্যের ধুপধুপানি শুরু হয়ে গেলো।

ছায়ামূর্তিটা বসা থেকে উঠে,আমার শরীরটাকে নিজের দখলে করে নিলো।

আমার উপরে শুয়ে ঠোঁট জোড়া নিজের দখলে করে নিয়েছে।

তারমানে গতকাল কোনো স্বপ্ন দেখছিলাম না।সবটা ক্লিয়ার হয়ে আসছে আস্তে আস্তে।ঠোঁটে চুমু খাওয়া,সেই মাতাল করা স্মেল।


বিছানার পাশেই লাইটের সুইচ ছিলো।ঠুস করে সুইচটা টিপ দিয়ে উঠে বসে পড়লাম।অবাক করা বিষয় কাউকেই দেখতে পেলাম না!

কি হচ্ছে টা কি আমার সাথে!নাহ এর কিছু একটা করা দরকার।

ওয়েট বুদ্ধি পেয়েছি।বিছানা ছেড়ে উঠে পাকের ঘরে চলে গেলাম।

তারপর তেতো জাতীয় কিছু একটা ঠোঁটের উপরে লাগিয়ে দিলাম।

আমি জানি সে আবার আসবে।


রুমে এসে লাইট অফ করে শুয়ে আছি।ঘন্টা খানিক পর আবার কারোর উপস্থিতি টের পেলাম।আমি শিউর,যে সেই ছায়ামূর্তি টার কাজ।ছায়ামূর্তিটা এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে ঠোঁটটাতে চুমু বসিয়ে দিলো।বাছাধন,এবার আর চুমু খেতে পারবে না।ঠোঁটে তেতো লাগিয়ে রেখেছি।ছায়ামূর্তিটা আমাকে অবাক করিয়ে দিয়ে সজোড়ে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলো গালের মধ্যে।থাপ্পড়টা এত জোরে মেরেছে,যে মনে হচ্ছে এখনি জান বের হয়ে যাবে।তখনি পাশ থেকে কান্নার আওয়াজ ভেসে আসলো!

কেউ একজন ফুফিয়ে ফুফিয়ে কান্না করছে!


চলবে....?

Next part er jonno wait korun

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

বিজ্ঞাপন

জ।


https://vindaleue.xyz/2025241470119