Type Here to Get Search Results !

কর্ণফুলীতে ইউপি নির্বাচনের প্রচারণা শুরু


কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম)  প্রতিনিধি   

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় ৪টি ইউনিয়নের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ছিল ২৫ নভেম্বর । মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২৯ নভেম্বর, মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ সময় ৬ ডিসেম্বর ও ভোট গ্রহণ হবে ২৬ ডিসেম্বর। সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
উপজেলার ৪ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার লক্ষে শেষ দিনে মনোনয়ন দাখিল করেছেন। এর মধ্যে চারজন দলীয় প্রার্থী আর অন্য ০৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। ১ জন ‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’ দলের প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন।
ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন ইউনিয়নে বয়ে চলছে ভোটের গরম হাওয়া। প্রার্থীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কুশল বিনিময়ও করছেন । হাটে-বাজারে রাস্তা-ঘাটে চায়ের দোকানে প্রার্থীদের নিয়ে চলছে আলোচনা-সমলোচলার ঝড়। যদিও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীরা ব্যতিত অন্যরা এখন পর্যন্ত  মার্কা পাননি, তবুও প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।

উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪ ইউনিয়নের ভোটের তারিখ নির্ধারিত হলেও তফসিল বাকি ১ ইউনিয়নের। তবে সব ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে, পাড়ায়-মহল্লায় বিভিন্ন দলের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও মেন্বার প্রার্থীরা নানা রকমভাবে চালাচ্ছেন তাদের প্রচারণা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নির্বাচনে জয়ী হওয়ার আগেই নতুন নতুন চেয়ারম্যান প্রার্থীরা এলাকার রাস্তা-ঘাটের উন্নয়নসহ দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের রয়েছে ১২ জন  চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। এছাড়াও প্রার্থীরা সাধারণ জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছেন উন্নয়নমুখী নানা ধরণের আশ্বাস ও আশার বাণী। সমর্থন পাওয়ার জন্য তৎপর হয়ে উঠেছে ওইসব ইউনিয়নের প্রার্থীরা।ক্রমেই জমে উঠছে নির্বাচনী হাওয়া। চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থীরা তাদের ভোট বাড়াতে প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে এমনকি নীরবে কাজ করে চলেছেন।

ঘরোয়া বৈঠকসহ মোড়ে মোড়ে চা-স্টলে ভিড় জমাচ্ছেন। এলাকার সব চা-স্টলগুলোতে এখন জমজমাট বেচা-বিক্রি চলছে। বিয়ে-বাড়িসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে তাদের পদচারণা বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সেসব অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নিজের পরিচিতি তুলে ধরে দোয়া ও ভোট প্রার্থনা করে নিজেদের অবস্থানের জানান দিচ্ছেন। মাঠ দখলের জন্য বর্তমান নতুন ও সাবেক চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থীরা তাদের জয় নিশ্চিত করতে কোমর বেঁধে আগাম মাঠে নেমে পড়েছেন নির্বাচনী যুদ্ধে। অনেকে ২/৩ বছর আগে থেকেই নিজেকে জাহির করতেও পিছপা হননি। বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির, তাফসিরুল কুরআন মাহফিল, জলসা,ধর্মীয় সভা-সমাবেশ, শীতবস্ত্র বিতরণ, বিভিন্ন খেলা-ধুলার অনুষ্ঠানগুলোতে পরিচিতি নানা কৌশলে তুলে ধরেছেন।

এদিকে সর্বত্র ভোটারদের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে চলছে চুলচেড়া বিশ্লেষণ। নির্বাচনের কথা শুনে সাধারণ ভোটাররা বিভিন্ন চায়ের দোকানে দিচ্ছেন নির্বাচনী আড্ডা।
ভোটের তারিখ শুনে আনন্দিত স্থানীয়রা। তবে আসন্ন ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী ও ভোটারেরা চায় উৎসবমুখর ও ভয়-ভীতিহীন পরিবেশ। যাতে তারা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবে এটাই ভোটারদের দাবি।

এ বিষয়ে কথা হয় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ভোটারদের সাথে। জুলধা ইউনিয়নের ভোটার এম আলী হোসেন, বড়উঠান ইউনিয়নের ভোটার জামাল ও মোজাম্মেল, চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের আবুল হোসেন ও মিজানুর বলেন, আমরা মার্কা নয়, যোগ্য ও পছন্দের প্রার্থী দেখে নির্ভয়ে ভোট দিতে চাই। তবে এর জন্য চাই ভোটের উৎসবমুখর ও সুষ্ঠু পরিবেশ।

বড়উঠান ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বড়উঠান ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেন, ‘গত এক দশক যাবত আমি বড়উঠানবাসীর সেবা করে আসছি। তাদের বিপদে আপদে পাশে থেকেছি। এলাকার উন্নয়নে কাজ করেছি। এবারও যেহেতু দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে আমাকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি আমার ইউনিয়নবাসী আমাকে এবারও নির্বাচিত করবেন। আমি অতীতের মতো উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করব (ইনশাল্লাহ)।

আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোহাম্মদ সোলায়মান তালুকদার বলেন, ‘দীর্ঘদিন যাবত আওয়ামী যুব লীগের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। সব সময় এলাকার জনগণের পাশে ছিলাম। দল থেকে এবার বড় দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে। জনগণ চাইলে চরলক্ষ্যাকে একটি আধুনিক ও ডিজিটাল ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’

শিকলবাহা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম ফোরকান বলেন, ‘দলীয় ভাবে আমাকে একটি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দায়িত্বটা হলো ইউনিয়নের মানুষের পাশে থাকার। আমি চেষ্টা করব আমার ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের সুখে দুঃখে থেকে কাজ করে যেতে। পাশাপাশি শিকলবাহাকে মাদকমুক্ত করতে সবাইকে সাথে নিয়ে কাজ করতে চাই।’

শিকলবাহা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিলকারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘দলীয় ভাবে মনোনয়ন না পাওয়ায় এবার নির্বাচন করতে আগ্রহী ছিলাম না। কিন্তু ইউনিয়নবাসীর প্রবল চাপের মুখে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য হচ্ছি। এলাকার জনগণের প্রতি আমার যে দায়িত্ববোধ এবং এলাকার উন্নয়নে যে ভূমিকা রয়েছে তারই প্রতিদান হিসেবে জনগণ আমাকে আবারও প্রার্থী হিসেবে চাচ্ছেন। আমি তাদের আশা পূরণ করতে চাই।’

জুলধা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাজী নুরুল হক‌‌‌ বলেন, দল থেকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। ভোটে নির্বাচিত হলে এলাকার মানুষের পাশে থাকব।আরো বলেন, আমরা চাই ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ। যাতে ভয়ভীতিহীন পরিবেশে জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন। আশা করছি প্রশাসন নিরপেক্ষ থেকে ভোটের পরিবেশ বজায় রাখতে সচেষ্ট থাকবেন।
জুলধার স্বতন্ত্র প্রার্থী হাজী রফিকউল্লাহ বলেন, জনসাধারণ যাতে পছন্দের প্রার্থীকে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন এ ব্যাপারে আমরা তাদেরকে উৎসাহ জোগাব এবং সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে যাবো।

কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাচন অফিসার আবদুল শুক্কুর বলেন, এই উপজেলায়  ৪টি ইউনিয়নের নির্বাচন ২৬ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হয়েছে। আমি দৃঢ়ভাবে আশা করছি ভোটাররা উৎসবমুখর পরিবেশে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভীতিহীন পরিবেশে ভোট দিতে পারবে ইনশাআল্লাহ।



Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

বিজ্ঞাপন

জ।


https://vindaleue.xyz/2025241470119